আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক ও আর্থিক খাতে দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ম ও লুটপাটের ফল এখন সাধারণ গ্রাহকদের ভোগান্তি হিসেবে দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর মতিঝিল, হাটখোলা, বনানী ও মিরপুরের বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন প্রতিদিনই চোখে পড়ে। অনেকেই টাকা তুলতে পারছেন না, কেউ কিছুটা তুলতে পারলেও বিপুল ক্ষোভ ও হতাশায় ভেঙে পড়ছেন।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, একসময় দুর্বল ব্যাংকগুলিকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই সহায়তা বন্ধ হওয়ায় এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কার্যত দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছেছে।
মতিঝিলের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের একজন গ্রাহক জানিয়েছেন, “ছেলের স্কুল ফি দিতে এসেছিলাম, কিন্তু টাকা পেলাম না। ব্যাংক শুধুই পরের দিনের আশ্বাস দিচ্ছে।” হাটখোলার ইউনিয়ন ব্যাংকের শাখায় কর্মকর্তারা বলছেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা বন্ধ করায় এক মাস ধরে গ্রাহকদের কোনো অর্থ ফেরত দিতে পারছি না। নিজেরাও বেতন পাচ্ছি না।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকট একদিনে তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক প্রভাব, খেলাপি ঋণ, কাগুজে কোম্পানিকে হাজার কোটি টাকা ঋণ, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণহীনতা ও দুর্নীতির কারণে সাধারণ গ্রাহক আজ দারুণ ভোগান্তির মুখোমুখি।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, দুর্বল ব্যাংকগুলো ধাপে ধাপে মার্জার ও সংস্কারের আওতায় আনা হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। এর মধ্যে সাধারণ গ্রাহকরা ব্যাংকে গিয়ে আশাহত হয়ে ফিরছেন এবং জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে না পারায় অনেকেই ধারদেনায় ডুবে যাচ্ছেন।