জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিনিধিদল সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল ৩:০০ টায় নিউইয়র্কের জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান
ড. ইউনূসের সাথে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক দলের (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. তাসনিম জারা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
ডক্টর ইউনুস এবং জামাতে ইসলামের নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এয়ারপোর্ট থেকে নিরাপদে বেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এন সি পি এবং বিএনপি’র নেতা মীরজা ফখরুল ইসলাম কে এয়ারপোর্টের বাইরে এলে আওয়ামী লীগ দলীয় ক্যাটাররা অপদস্ত এবং গালাগালি চিত্র স্যাশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জুলাইয়ের জনশক্তিকে অত্যন্ত ব্যতীত করেছে। এর আগেও বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এবং ফ্রান্সে আইন উপদেষ্টা ডক্টর আসিফ নজরুলের প্রতি আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীদের বিষয়টি সবার নজরে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন গুলোর কাজকি?
তার আগে আমরা জন,এফ, কেনেডি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ডিপ্লোম্যাটিক এবং ভিআইপি রিসিপশনের বিষয়গুলো একটু খতিয়ে দেখব।
JFK International Airport-এ VIP reception (ভিআইপি রিসেপশন) আসলে কয়েকভাবে করা হয়, যেটা নির্ভর করে যাত্রী কাকে রিসিভ করা হচ্ছে, তাঁর স্ট্যাটাস (সরকারি প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপ্রধান, কূটনীতিক, কর্পোরেট ভিআইপি বা সাধারণ যাত্রী যারা পেইড সার্ভিস নেয়) এবং কোন টার্মিনাল ব্যবহার করছে তার উপর।
সরকারি ও রাষ্ট্রীয় ভিআইপি (Heads of State, Ministers, Diplomats)
এরা সাধারণ যাত্রীদের মত সাধারণ টার্মিনাল দিয়ে বের হন না।
● Port Authority, U.S. Customs and Border Protection (CBP), এবং U.S. Secret Service/State Department Protocol টিম বিশেষ সিকিউরিটি ও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা নেয়।
● আলাদা গেট বা প্রাইভেট সেলুন (VIP Lounge) ব্যবহার হয়।
● গাড়ি (motorcade) বিমান পর্যন্ত চলে যায়, সেখান থেকেই রিসেপশন টিম রিসিভ করে।
● সাধারণত রাষ্ট্রদূত, কনসাল জেনারেল, দূতাবাস/কনস্যুলেট টিম এবং কখনো স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকে।
সাধারণ যাত্রীদের জন্য Paid VIP/Meet & Assist Services
● যারা অফিসিয়াল ভিআইপি না, তারাও বিশেষ “Meet & Greet” সার্ভিস নিতে পারে।
● আগেই বুক করলে কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বিমানবন্দরে গেটে গিয়ে রিসিভ করে।
● ইমিগ্রেশন/সিকিউরিটি লাইনে গাইড করে, লাগেজ হ্যান্ডল করতে সাহায্য করে।
● ড্রাইভার/গাড়ি প্রস্তুত থাকে বাইরের VIP পার্কিং এলাকায়।
পৃথিবীর কোন দেশের ভিআইপিদের Arrival পার্কিং লট পর্যন্ত পায়ে হেঁটে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠাতে JFK একজন employee হিসেবে আমরা কখনো দেখিনি। Arrival main Exit থেকে passenger pickup area অনেক দূর।
এক্সিটের এর প্রথম হচ্ছে–
A- shuttle এবং VIP pick up.
তারপর হচ্ছে B টেক্সি তারপরে C এবং D হচ্ছে passenger pickup এরপর হচ্ছে পার্কিং লট।
প্রশ্ন হচ্ছে বাইরে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর উনিদেরকে এই জায়গাগুলো অর্থাৎ বাইরের প্রথম লাইন ভিআইপি পিকআপ গাড়ি না রেখে পায়ে হেঁটে পার্কিং লটে এসে গাড়িতে উঠতে হলো কেন?
● বিএনপি এবং এনসিপ এর নেতারা Arrival Exit আশপাশে অবস্থান নিলেন না কেন?
● বাংলাদেশী অনেক দলীয় নেতাকর্মী এয়ারপোর্ট এর এমপ্লয়ী আছে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলো না কেন?
● বাংলাদেশ হাই কমিশন এই সমস্ত ভিআইপিদের নিরাপত্তার কি ব্যবস্থা আছে?
এগুলো উত্তর আমরা তাদের কাছে জানতে চাইবো যারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন সংগ্রামে আমরা তাদেরকে দেখেছি নিউইয়র্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে কর্মসূচি পালন করতে?
দ্বিতীয় তো বাংলাদেশ হাই কমিশন তাদের পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে হবে ভিআইপি প্রোটকলের বিষয়ে! আমরা জানি রাষ্ট্রীয় ভিআইপি → সরকারি প্রটোকল, আলাদা রিসেপশন ব্যবস্থা।
কর্পোরেট/সেলিব্রিটি ভিআইপি → প্রাইভেট স্যুট বা চার্টার্ড সার্ভিস।
সাধারণ ভিআইপি রিসেপশন (পেইড) → Meet & Greet সার্ভিস বুক করে করা যায়।
এই সমস্ত নিয়ম কানুনের বাইরে এসে আমরা যখনই নিজস্ব নীতি অবলম্বন করি তখনই আমাদেরকে বারবার হোঁচট খেতে হয়।
পৃথিবীর সব দেশে ডিপ্লোম্যাটিক এবং ভিআইপিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও আমাদের ডিপ্লোমাটিগ্রাম বারবার কেন তাদের ব্যর্থতা প্রকাশ করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয় এটা হয়তো অযোগ্য এবং অদক্ষতা অথবা তারা রাষ্ট্রের হয়ে অন্য কারো আনুগত্য প্রকাশ করছে।
মিসবাহ আহমেদ