শকুনের বাসায় ৬৭৫ বছরের...

সম্প্রতি ‘ইকোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় তারা এক চমকপ্রদ তথ্য আবিষ্কারের কথা জানান। আপনার...

নিউ ইয়র্কে ১১ বছরের...

গ্রেপ্তার কিশোরের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে আইউইটনেস নিউজ। নিউ ইয়র্কের...

শাপলা প্রতীক ইস্যুতে বিএনপিকে...

ভোটের লড়াইয়ে কেউ শাপলা প্রতীক চাইতেই পারে। কিন্তু সেই ইস্যুতে বিএনপি বা ধানের...

পরকীয়া মজেছেন আবু ত্বহা...

আলোচিত-সমালোচিত ইসলামিক বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানকে নিয়ে তার স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারা...
Homeরাজনীতিশিগগিরই দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নেব

শিগগিরই দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নেব

শিগগিরই দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বহুলপ্রত্যাশিত নির্বাচনের সময় দেশের জনগণের পাশেই থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান তারেক রহমান। সোমবার প্রচার হওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তার দেশে ফেরা, নির্বাচনে অংশ নেওয়া, নির্বাচনে দলের কৌশল, চব্বিশের

গণ-অভ্যুত্থান, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও তাদের নেতাকর্মীদের বিচার, নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতিসহ সমসাময়িক নানা বিষয় উঠে আসে। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কথা বলা প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোর্ট থেকে রীতিমতো একটা আদেশ দিয়ে আমার কথা বলার অধিকারকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি যদি গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাইতাম, হয়তো গণমাধ্যমের ইচ্ছা ছিল ছাপানোর; কিন্তু গণমাধ্যম সেটি ছাপাতে পারত না। আমি কথা বলেছি, সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায়। এভাবে আমি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি, ইনশাল্লাহ আমি মানুষের কাছে পৌঁছেছি। দেশে ফেরা নিয়ে তারেক রহমান বলেন, কিছু সংগত কারণে হয়তো দেশে ফেরাটা হয়ে উঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশাল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতি যখন করি, তখন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ওতপ্রোত সম্পর্ক থাকবেই। কাজেই যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহও থাকবে সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে, তখন জনগণের মাঝেই থাকব, ইনশাল্লাহ।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা তো আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে শুনেছি। সরকারেরও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেশেু অনেক সময় অনেক শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে, বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য জোটের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে বৈধ আইন আছে, সংবিধানে এখনো যেটি আছে, এর ভেতরে থেকে তারা রাজনীতি করতেই পারে। এটায় তো কোনো সমস্যা বা উদ্বেগের কোনো কারণ দেখি না। ইলেকশন হলে তো ইলেকশনে প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। বিএনপি তো আগেও নির্বাচন করেছে। কম্পিটিশন করেই বিএনপি নির্বাচন করেছে। প্রতিযোগিতা করেছে। উদ্বেগের কিছু নেই।

আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কোনো একটি পার্টিকুলার এলাকা থেকে দলের এমন একজন ব্যক্তিকেই নমিনেশন দিতে চাইব, যিনি ওই এলাকার সমস্যা সম্পর্কে সচেতন আছেন। যার সঙ্গে ওই এলাকার মানুষের সম্পৃক্ততা আছে, ওঠাবসা আছে, মানুষের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। এছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ, তরুণ, নারী, মুরুব্বিসহ ছাত্রছাত্রী-সবার সঙ্গে যার একটা কমিউনিকেশন আছে; এই ধরনের মানুষকেই আমরা প্রাধান্য দেব।

আসন্ন নির্বাচনে তারেক রহমানের ভূমিকা এবং সরাসরি নির্বাচন করবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বাভাবিকভাবে আমি একজন রাজনৈতিক দলের সদস্য, একজন রাজনৈতিক কর্মীও। নির্বাচনের সঙ্গে তো রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক কর্মীর ওতপ্রোতভাবে সম্পর্ক। কাজেই যেখানে জনগণ সম্পৃক্ত-এরকম একটি নির্বাচন হবে, সেখানে তো অবশ্যই আমি নিজেকে দূরে রাখতে পারব না। আমাকে আসতেই হবে। স্বাভাবিকভাবেই মাঠে থাকব আমি, ইনশাল্লাহ।

নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রত্যাশী হিসাবে তারেক রহমানকে দেখা যাবে কিনা-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপির পক্ষ থেকে দল সিদ্ধান্ত নেবে। আপনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না-এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, অবশ্যই নেব।

নির্বাচনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা কী হবে-এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে জনপ্রত্যাশিত যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক সক্ষমতা যদি অ্যালাও করে, উনি নিশ্চয়ই কিছু না কিছু ভূমিকা রাখবেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, এটি আমি এখনো বলতে পারছি না। ওনার শারীরিক বা ফিজিক্যাল অ্যাবিলিটির ওপর বিষয়টি কিছুটা হলেও নির্ভর করছে।

বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে পরিবারের প্রভাব কতটা থাকবে-এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাজনীতি পরিবারকরণ হয় না। এটি সমর্থনের ভিত্তিতে হয়। কাজেই যিনি অর্গানাইজ করে জনগণ ও দলকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে, সে এগিয়ে যেতে পারবে। সময় ও পরিস্থিতি সবকিছু প্রমাণ করে দেবে।

আপনার স্ত্রী বা কন্যা বা আপনার পরিবারে যারা আছেন, তারা রাজনীতিতে আসবেন কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, সময়-পরিস্থিতি বলে দেবে ওটা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, এই জুলাই আন্দোলনে আমাকে আমি কখনোই মাস্টারমাইন্ড হিসাবে দেখি না। জুলাই আন্দোলন বলে যেটি বিখ্যাত বা যেটি সবার কাছে গৃহীত, এই আন্দোলনটি সফল হয়েছে আগস্টে। কিন্তু এই আন্দোলনটির প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে বহু বছর আগে থেকে। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছে। মাদ্রাসার ছাত্ররাও ছিলেন এই আন্দোলনের মাঠে। গৃহিণীরা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে এসেছেন সন্তানের পেছনে। কৃষক, শ্রমিক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক, ছোট দোকান কর্মচারী বা দোকান মালিক থেকে শুরু করে গার্মেন্টস কর্মী-তারা নেমে এসেছিলেন। কোনো দল কোনো ব্যক্তি নয়, এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।

তিনি বলেন, সাধারণত কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে বা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শিশু হত্যা হয় না, শিশু শহীদ হয় না, শিশু মারা যায় না। কিন্তু আমরা দেখেছি এই আন্দোলনে প্রায় ৬৩ শিশু শহীদ হয়েছে, মারা গেছে। ২০০০-এর মতো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে আন্দোলনে। এছাড়া ৩০ হাজারের মতো মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, অন্ধ হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় সরকারসহ রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব, সেই পরিবারগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। যতটুকু সহযোগিতা তাদের করা যায়, যতটুকু সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের এই আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানো।

তারেক রহমান বলেন, এই আন্দোলনের ক্রেডিট দলমতনির্বিশেষে বাংলাদেশের জনগণের, কোনো একটি রাজনৈতিক দলের নয়। অনেকে হয়তো অনেক কিছু বলে থাকতে পারেন, ডিমান্ড করতে পারেন, সেটি তাদের অবস্থান।

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে, এতে কতটা আস্থা আছে-এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, একটি নির্বাচন হলেই যে রাতারাতি সব ঠিক হয়ে যাবে তা না। সমস্যাগুলো যখন আপনি অ্যাড্রেস করবেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে সমস্যা কমতে শুরু করবে। আমরা আনন্দিত যে দেরিতে হলেও সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছে। আমরা ডিসেম্বরের ভেতরে চেয়েছিলাম। ওনারা ফেব্রুয়ারির ভেতরে এখন নির্বাচনটি করতে চাইছেন। আমরা আস্থা রাখতে চাই যে, সরকার সে ব্যাপারে সবরকম উদ্যোগ পর্যায়ক্রমিকভাবে গ্রহণ করবে।

বিএনপি এককভাবে নাকি দলগতভাবে, জোটবদ্ধভাবে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচন করবে-এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, রাজপথের আন্দোলনে যে দলগুলোকে আমাদের সঙ্গে পেয়েছি, আমরা চাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে। সবার মতামতকে সঙ্গে নিয়েই আমরা রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে চাই।

দুর্নীতি প্রশ্নে বিএনপি ভোটারদের কীভাবে আশ্বস্ত করবে-এমন প্রশ্নের উত্তরে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাস্তবতা তো বুঝতে হবে। এটি একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। কাজেই এটি মানুষকে বুঝিয়ে বুঝিয়ে, আস্তে আস্তে করতে হবে। এতে সময় লাগবে। আমি এখন যত কথাই বলি না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে এ বিষয়ে সময় লাগবে; আমাদের কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।

ডাকসুর নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না-এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি না প্রভাব ফেলার কোনো কারণ আছে। ছাত্ররাজনীতি ছাত্ররাজনীতির জায়গায়, জাতীয় রাজনীতি জাতীয় রাজনীতির জায়গায়।

জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি সব সময় বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। কাজেই বিষয়টি আমরা এভাবেই দেখতে চাই। দেশের যে আইনকানুন আছে, এর ভেতরে থেকে যারা রাজনীতি করবে, অবশ্যই সবার রাজনীতি করার অধিকার আছে। এবং আমরা তো চাই, সবাই রাজনীতি করুক। বহুদলীয় রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ২০২৪ সালে স্বৈরাচার যেই হত্যাগুলো করেছে, দেশ স্বাধীনের পর যখন তারা সরকার গঠন করেছিল, তখনো তারা লুটপাট, গুম-খুনও করেছে। বিগত ১৭ বছর গুম-খুন যারা করেছে, এর জবাব যেরকমভাবে তাদেরই (আওয়ামী লীগ) দিতে হবে, ঠিক একইভাবে ৭১ সালে কোনো রাজনৈতিক দলের যদি বিতর্কিত ভূমিকা থেকে থাকে, তাহলে তাদের জবাব তারাই দেবেন। ওটা তো আর আমি দিতে পারব না। আমারটা আমি দিতে পারব। অন্যেরটা তো আমি দিতে পারব না।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান কী? এর উত্তরে তারেক রহমান বলেন, দল হিসাবে তারা যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী বিচার হবে। দেশের আইন সিদ্ধান্ত নেবে। সোজা কথায়, অন্যায়কারীর বিচার হতেই হবে। সেটি ব্যক্তি হোক, কিংবা দলই হোক। যারা জুলুম করেছে, তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে, দলও হতে পারে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করতে চাই, যে দলের ব্যক্তিরা বা যে দল মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম-খুন করে, দেশের মানুষের অর্থসম্পদ লুটপাট করে, বিদেশে পাচার করে-জনগণ তাদের সমর্থন করতে পারে বলে আমি মনে করি না। জনগণ যদি সমর্থন না করে, কোনো রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক সংগঠনের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না। যেহেতু জনগণের শক্তি ও সিদ্ধান্তে আমরা বিশ্বাস করি, তাই জনগণের সিদ্ধান্তের ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। আমি মনে করি, এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক জনগণ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments