November 7, 2025, 4:08 am
Title :
কিডনি ভালো রাখতে দিনে কতটুকু পানি খাওয়া জরুরি? জেনে নিন পায়ের ফাঁকে বালিশ দিয়ে ঘুমাচ্ছেন? কী হয় জেনে নিন ডি ককের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের দাপুটে জয় ‘নিত্যনতুন প্রশ্ন’ তুলে ভোটে বাধা সৃষ্টি করবে না রাজনৈতিক দলগুলো, বিশ্বাস বিএনপির এবার ঢাকার হয়ে বিপিএল মাতাবেন তাসকিন এ যাত্রায় আপনি যুক্ত হলে আমরা সফল হতে পারব: তাসনিম জারা ‘আয়নাঘর’ থেকে বেঁচে ফিরে ময়মনসিংহ-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মাজেদ কোমা থেকে ফিরলেন ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানি বিজ্ঞানীর মেয়ে জাহানারার বিস্ফোরক অভিযোগে তদন্তে নামছে বিসিবি অবসর নিচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের প্রথম নারী স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি

একসময় ছিলেন এক গুরুর শিষ্য, দ্বন্দ্বে জড়িয়ে খুন দুজনই

Reporter Name
  • Update Time : Thursday, November 6, 2025
  • 9 Time View

বিদেশে বসে চট্টগ্রামের অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করেন সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ। চাঁদাবাজি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে তাঁর ডান হাত হিসেবে কাজ করতেন ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন বাবলা ও আকবর আলী ওরফে ঢাকাইয়া আকবর। ১০ বছর আগে সাজ্জাদের দল থেকে বেরিয়ে নিজেরাই পৃথক দল গড়ে তুলেছিলেন তাঁরা। প্রায় ছয় মাসের ব্যবধানে দুজনই খুন হলেন। অভিযোগ উঠেছে যে প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠায় নিজের একসময়কার দুই শিষ্যকে সরিয়ে দিয়েছেন সাজ্জাদ আলী।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নগরের পাঁচলাইশ চালিতাতলী এলাকায় বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগের সময় ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন বাবলার ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর আগে ২৩ মে আরেক শিষ্য আকবর আলী ওরফে ঢাকাইয়া আকবরও গুলিতে খুন হন।

পুলিশ জানায়, চাঁদা না পেলেই গুলি ছোড়েন সাজ্জাদের অনুসারীরা। নগরের চান্দগাঁও, বায়েজিদ বোস্তামী ও পাঁচলাইশ এবং জেলার হাটহাজারী, রাউজানসহ পাঁচ থানার পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে সাজ্জাদের বাহিনীর কারণে আতঙ্কে থাকতে হয়। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ জেলায় জোড়া খুনসহ ১০টি খুনে সাজ্জাদের অনুসারীদের নাম উঠে এসেছে। তাঁরা কখনো আধিপত্য বজায় রাখতে নিজেদের প্রতিপক্ষকে খুন করছেন, আবার কখনো ভাড়াটে খুনি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছেন। তবে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

যেভাবে উত্থান বড় সাজ্জাদের

নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার আবদুল গণি কন্ট্রাক্টরের ছেলে সাজ্জাদ আলী। ১৯৯৯ সালের ২ জুন পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর লিয়াকত আলী খান বাড়ির সামনে খুন হন। লিয়াকত হত্যায় সাজ্জাদ জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ থাকলেও কেউ আদালতে সাক্ষ্য না দেওয়ায় ওই হত্যা মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়ে যান। লিয়াকত হত্যার পর অপরাধজগতে সাজ্জাদের নাম ছড়িয়ে পড়ে।

২০০০ সালের ১২ জুলাই। মাইক্রোবাসে করে একটি দলীয় সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মী। পথে বহদ্দারহাটে ওই মাইক্রোবাস থামিয়ে ব্রাশফায়ার করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাস্থলেই ওই ছয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ আটজন মারা যান। ‘এইট মার্ডার’ নামে পরিচিত আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডে সাজ্জাদ নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০০০ সালের ১ অক্টোবর একে-৪৭ রাইফেলসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বড় সাজ্জাদ। ২০০৪ সালে জামিনে বেরিয়ে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান।

শুরুতে নুরনবী ম্যাক্সন, সরোয়ার হোসেন, আকবর আলী ও ছোট সাজ্জাদকে নিয়ে দল গড়েন বড় সাজ্জাদ। তাঁদের হাতেই ছিল অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ। ম্যাক্সন ভারতে মারা যান। সরোয়ার দল ছেড়ে দেন। এরপর ছোট সাজ্জাদ দলের হাল ধরেন ২০১৫ সাল থেকে।

পুলিশ জানায়, বড় সাজ্জাদের বাহিনীতে অন্তত ২৫ জন সক্রিয় সন্ত্রাসী রয়েছে। মূল নেতৃত্বে রয়েছেন ১৭ মামলার আসামি বর্তমানে কারাগারে থাকা ছোট সাজ্জাদ। তিনি কারাগারে যাওয়ার পর ১৫ মামলার আসামি রায়হান নেতৃত্বে আসেন। এ ছাড়া এই দলে সক্রিয় আছেন মো. খোরশেদ, মোহাম্মদ মোবারক হোসেন ওরফে ইমন, মোহাম্মদ ওরফে ভাতিজা মোহাম্মদ, ববি আলম, মো. কামাল, মো. হাসান, নুরুল হক, মোহাম্মদ বোরহান, মো. মবিন, মোবারক, মো. কাদের, মো. তপু, মো. আজম, মনির, তুষার, তুহিন, সোহেল, ছালেক, এরশাদ, ওসমান আলী ও মো. আলভীন। তাঁরা সবাই অস্ত্র চালনায় বিশেষ পারদর্শী। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের মামলা রয়েছে। বিদেশ থেকে মুঠোফোনে তাঁদের নির্দেশনা দিয়ে আসছেন বড় সাজ্জাদ।

চাঁদা না পেলেই গুলি

গত ১ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের চান্দগাঁও মোহরা এলাকায় মোহাম্মদ ইউনুসের বাসায় হানা দেন একদল অস্ত্রধারী ব্যক্তি। অস্ত্রধারীদের একজন বলতে থাকেন, ‘সাজ্জাদ ভাইয়ের কথা ভালো লাগে নাই, এবার কবরে যা।’ এ কথার পরই শুরু হয় গুলিবর্ষণ। ব্যবসায়ীর হাঁটু, কোমর, পাসহ শরীরের চারটি স্থানে গুলি লাগে। তবে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। এ ঘটনার পর ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘যেভাবে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়, ভাবিনি বাঁচব। এখনো বেঁচে আছি বলে মনে হয় না। সাজ্জাদ বিদেশে বসে দেশে এসব করার সাহস কীভাবে পায়? তার সহযোগীরা এত অস্ত্র কোথা থেকে পায়?’ এ বিষয়ে সাজ্জাদ বলেন, তাঁর নাম ভাঙিয়ে কেউ এসব করছেন।

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ইটভাটা ও আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম সন্ত্রাসী ঘটনার শিকার হন। এই ব্যবসায়ীর কাছে ১৫ দিন আগে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় ২০ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে। পরে মুঠোফোনে ব্যবসায়ীকে বলা হয়, এবার বাড়িতে গুলি করেছেন তাঁরা। এরপর তাঁদের শেষ করে দেওয়া হবে। এখানেও সাজ্জাদের অনুসারীদের নাম উঠে আসে।

ঘুরেফিরে আসছে রায়হানের নাম

ছোট সাজ্জাদের অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ রায়হান। গতকাল সরোয়ারকে গুলি করে খুনের ঘটনায় রায়হান জড়িত ছিলেন বলেদাবি করেছে তাঁর পরিবার ও পুলিশ। এর আগে ২৫ অক্টোবর মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়িতে ফেরার সময় রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে। এ ঘটনার পর এক ব্যক্তির সঙ্গে মুঠোফোনে আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানেও ‘সন্ত্রাসী’ রায়হানকে নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা গেছে আলমকে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

চাঁদা না পেলেই গুলি ছোড়েন সাজ্জাদের অনুসারীরা। নগরের চান্দগাঁও, বায়েজিদ বোস্তামী ও পাঁচলাইশ এবং জেলার হাটহাজারী, রাউজানসহ পাঁচ থানার পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে সাজ্জাদের বাহিনীর কারণে আতঙ্কে থাকতে হয়। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ জেলায় জোড়া খুনসহ ১০টি খুনে সাজ্জাদের অনুসারীদের নাম উঠে এসেছে। তাঁরা কখনো আধিপত্য বজায় রাখতে নিজেদের প্রতিপক্ষকে খুন করছেন, আবার কখনো ভাড়াটে খুনি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছেন। তবে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

হত্যার ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক ব্যক্তির সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলছেন আলমগীর আলম। ‘সন্ত্রাসী’ রায়হানের নাম উল্লেখ করে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি যে শোডাউন করিয়েছ আতঙ্ক সৃষ্টি করে, আমাকে তো মেরেও ফেলতে পারত, তুমি তো ও রকম মানুষ নিয়ে এসে আমাকে মেরে ফেলতে পারো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে তাড়ানোর জন্য তুমি এসব করছ।…ওরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসেছে আমাকে থ্রেট দিতে।’

হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় কারাগারে গিয়ে চট্টগ্রামের আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে পরিচয় হয় রায়হানের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দুজন কারাগার থেকে জামিনে বের হন। এরপর ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রায়হান। সাজ্জাদ সম্প্রতি আবারও কারাগারে গেলে তাঁর অস্ত্রভান্ডারের দেখভাল করছেন এই রায়হান।

আমি ঢাকাইয়া আকবর খুনের মামলার ২ নম্বর আসামি রায়হান, মাথার খুলি উড়ায় ফেলব।…আকবর সি বিচে কীভাবে পড়ে ছিল, তুই দেখেছিস? তুইও পড়ে থাকবি।’ ২৫ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট এলাকার এক ওষুধের দোকানিকে এভাবেই মুঠোফোনে হুমকি দেন ১৩টি মামলার আসামি ‘সন্ত্রাসী’ মোহাম্মদ রায়হান। এর পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটছে ওই দোকানির। চাঁদা না পেয়ে ১ আগস্ট চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকার এক ব্যবসায়ীকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে। মো. ইউনুস নামের ওই ব্যবসায়ী নদী থেকে বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত খননযন্ত্রের ব্যবসা করেন।

পুলিশ জানায়, রায়হানের নামে গত বছরের ৫ আগস্টের পর চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় জোড়া খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হত্যা মামলা। নগরের পাশাপাশি জেলায়ও তাঁর অবাধ বিচরণ রয়েছে।

জোড়া খুনের এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল বলেন, কথায় কথায় গুলি ছোড়েন সন্ত্রাসী রায়হান। তাঁকে ধরতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েও পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, রাউজান ও ফটিকছড়ির পাহাড়ি এলাকায় আস্তানা করেছেন রায়হান। সেখান থেকে এসে অপরাধ করেন, বিশেষ করে গুলির পর দ্রুত পাহাড়ের নিরাপদ স্থানে চলে যান তিনি। সন্ত্রাসী সাজ্জাদের কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন রায়হান।

সাজ্জাদের আরেক সহযোগী মোবারক হোসেন ওরফে ইমন। ফটিকছড়ির কাঞ্চনগরের মো. মুসার ছেলে। জোড়া খুন ও ঢাকাইয়া আকবর হত্যা মামলাসহ সাত মামলার আসামি। অস্ত্র পরিচালনায় পারদর্শী। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর পুরোনো ছবিতে ১৫-২০টি অস্ত্র বহনের প্রমাণ রয়েছে। জোড়া খুনের ঘটনায় সন্ত্রাসী ও মোটরসাইকেল ভাড়া করে এনেছিলেন তিনিই।

ছোট সাজ্জাদ যেভাবে আলোচনায়

হাটহাজারী শিকারপুর এলাকার মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে মুরগির দোকানে কাজ শুরু করেন। সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন চুরি ও ছিনতাইয়ে। যুক্ত হয়ে যান বড় সাজ্জাদের দলে। সরোয়ার, ম্যাক্সন, আকবরসহ তাঁরা সবাই ছিলেন বড় সাজ্জাদের সঙ্গে। পরে ছোট সাজ্জাদ হাল ধরেন দলের।

গত বছরের ২৯ আগস্ট এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদ তাঁর প্রতিপক্ষ সরোয়ারের সহযোগী মো. আনিস ও কায়সারকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার অনন্যা আবাসিক এলাকায় গুলি করে খুন করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগীদের আসামি করা হয়েছে।

একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চাঁদা না পেয়ে অক্সিজেন কালারপুল এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করেন সাজ্জাদ। প্রকাশ্য গুলি করা সাজ্জাদকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে পুলিশ। ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের গুলি করে পাশের ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যান সাজ্জাদ। গুলিতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজন।

ওসিকে পেটানোর হুমকি ফেসবুকে

পুলিশের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি ছোট সাজ্জাদ নিজের ফেসবুকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার তৎকালীন ওসি আরিফুর রহমানকে প্রকাশ্য অক্সিজেন এলাকায় পেটানোর হুমকি দেন। পরদিন নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেন। পরে ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেন চট্টগ্রামের কিছু লোকজন। ধরা পড়ার পর সাজ্জাদকে ছাড়িয়ে আনতে বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছিটানোর কথা বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিন। কারাগারে গিয়েও আলোচনায় থাকেন সাজ্জাদ। তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ায় বাকলিয়ায় জোড়া খুন, ঢাকাইয়া আকবর ও সর্বশেষ সরোয়ারকে গুলি করে খুন করার ক্ষেত্রে তাঁর সহযোগীদের নাম উঠে আসে।

যা বললেন বড় সাজ্জাদ

বিদেশে বসে খুনের নির্দেশ, চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ আলী আজ দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, ‘বিদেশে ব্যবসা, দেশে ভাড়া ঘর থেকে অনেক টাকা পায়। আমাদের পরিবার বিত্তশালী। আমি কেন বাহিনী তৈরি করে চাঁদাবাজি, খুন করব। উল্টো আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সাজ্জাদ, রায়হানের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। তবে সরোয়ার সন্ত্রাসী, সেটি জানি। পুলিশ বের করুক, তাকে কারা মেরেছে।’

পুলিশ কমিশনার যা বললেন

নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ গতকাল রাতে সাংবাদিকদের বলেন, অপরাধীদের শীর্ষ একজন (ছোট সাজ্জাদ) জেলে স্ত্রীসহ আছেন। তাঁর সহযোগীরা রিমোট (প্রত্যন্ত) এলাকায় পালিয়ে থাকেন। তাঁরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যান। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। বিদেশে বসে একজন কলকাঠি নাড়ছেন। তাঁকে ফিরিয়ে এনে ধরার চেষ্টা রয়েছে।

গুলিতে নিহত আনিসের স্ত্রী অ্যানী আকতার বলেন, এক বছরেও স্বামীর প্রকৃত খুনিদের ধরতে পারেনি পুলিশ, যার কারণে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © ajkerdorpon.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com