বরগুনা–পটুয়াখালীসহ দেশের উপকূলজুড়ে কার্তিকের শেষ সপ্তাহে হঠাৎ করেই জেঁকে বসেছে শীত। গত তিন-চার দিন ধরে রাতের শেষভাগ থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া জনজীবনে শীতের অনুভূতি আরো বাড়িয়ে তুলছে। পুরো উপকূলীয় অঞ্চলে বইছে উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাস। যেন আগাম শীতের বার্তা নিয়ে এসেছে প্রকৃতি।
উপকূলীয় এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, গত তিন-চার দিন ধরেই রাত নামলেই অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীতলতা। ভোরের দিকে কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, কমছে দৃষ্টিসীমা। মাছ ধরার নৌকার মাঝিরা বলেন, ভোরের দিকে নদীতে কুয়াশার চাদর পড়ে যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে দিনের দিকে রোদ উঠলেও ঠান্ডা বাতাসের দাপটে গরম কাপড় ছাড়া বের হওয়া বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গত দুই ধরে গেছে, বরগুনার বেতাগী পৌর শহরে শীত আগাম বসে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। ভোরে রিকশাচালক, দিনমজুর, কৃষিজীবী ও জেলেরা কাজ করতে গিয়ে শীতে কাঁপছেন। ফুটপাতের খাবারের দোকানগুলোতে বেড়েছে গরম চা–কফির চাহিদা। অপরদিকে শিশুরা ও বয়স্কদের ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সর্দি–কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে উপকূলে উত্তর দিক থেকে বইতে থাকা শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। শুক্রবার বরিশালের রাতের তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরো সামান্য কমতে পারে।
শীতের আগমনে কৃষক সমাজ কিছুটা স্বস্তি পেলেও ভোরের শিশিরে ফসলের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। সেই সঙ্গে নাব্যতা কমে যাওয়ায় নদীপথে নৌযান চলাচলেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কার্তিকের শেষ সপ্তাহে শীতের এমন আগাম উপস্থিতি উপকূলের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নতুন ঋতুর আমেজ বয়ে এনেছে।