বিহারের নির্বাচনে আবারো বাজিমাত করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সমর্থিত এনডিএ। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিহারে নীতীশ ঝড়ে অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে কংগ্রেস–আরজেডির। ২৪৩ আসন বিশিষ্ট বিহার বিধানসভায় ডবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছে নীতীশ কুমার-বিজেপির এনডিএ জোট। ওদিকে বিরোধীদের মধ্যে শুধুই হতাশা।
এদিকে প্রত্যাশা মতোই এদিনের ভোটে জয়ের মুকুট উঠেছে আলিনগরের বিজেপি প্রার্থী এবং ভারতজুড়ে জনপ্রিয় গায়িকা মৈথিলি ঠাকুরের মাথায়। তারই সঙ্গে একাধিক রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ খ্যাত এই লোকসঙ্গীত শিল্পী।
দেশের প্রথম জেন জি বিধায়ক মৈথিলি
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে আলিনগর থেকে ১২.০৩৬ ভোটে জিতে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন মৈথিলি। তারই সঙ্গে শুধু বিহার নয়, বর্তমানে দেশের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়কও মৈথিলি ঠাকুর। ২০০০ সালের ২৫শে জুলাই জন্ম মৈথিলির। তিনি দেশের প্রথম জেন জি বিধায়ক।
এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মৈথিলি ঠাকুর বলেন, ‘এটা স্বপ্নের মতো। আমার কাছ থেকে মানুষের অনেক প্রত্যাশা আছে। বিধায়ক হিসাবে এটি আমার প্রথম মেয়াদ হবে এবং আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। আমি আমার এলাকাবাসীর ঘরের মেয়ে হয়ে তাদের সেবা করব।
আমি এই মুহূর্তে শুধু আলিনগরকেই দেখতে পাচ্ছি এবং কীভাবে সেখানে কাজ করবো সেই ভাবনাচিন্তা করছি’। তিনি আরও বলেছিলেন যে তিনি নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করার সময় একটি ডায়েরি রেখেছিলেন। যে জায়গায় যে পরিবর্তন আনা দরকার, তা তিনি লিখে রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় যে কোনও ত্রুটি রয়েছে, আমি সেগুলি সমাধান করতে চাই। আগামী পাঁচ বছরে আমি চাই আমার কাজ প্রমাণ করুক যে এমন একজন তরুণ প্রার্থীর প্রতি যে আস্থা রাখা হয়েছে তা ন্যায়সঙ্গত ছিল। ভবিষ্যতের জন্য আমি এটাই পরিকল্পনা করছি।’
কে এই মৈথিলি ঠাকুর?
ভারতীয় শাস্ত্রীয় এবং লোকসঙ্গীতের একজন প্রশিক্ষিত কণ্ঠশিল্পী, বিহারের লোক ঐতিহ্যের প্রচারের জন্য তাকে ২০২১ সালে সংগীত নাটক আকাদেমি দ্বারা ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান যুব পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিলো। তিনি তার বাবা এবং দাদার তত্ত্বাবধানে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় এবং লোকসঙ্গীতের পাশাপাশি হারমোনিয়াম এবং তবলা শিখেছেন। ইন্ডিয়ান আইডল জুনিয়র, সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পসে অংশ নিয়েছেন মৈথিলি।
তবে খুব বেশিদূর এগোতে পারেননি। তবে দমে যাননি। ২০১৭ সালে রাইজিং স্টারে অংশ নিয়েছিলেন মৈথিলি। সেই রিয়ালিটি শো-এর রানার আপ হয়েছিলেন ১৭ বছরের মৈথিলি।
পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ হইচই ফেলে দেন মৈথিলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার গানের গুণমুগ্ধ শ্রোতার সংখ্যা অগণিত। বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর হিন্দি চলচ্চিত্র সংগীত থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছিলেন মৈথিলি ঠাকুর।
পরে ২০২৪ সালে অজয় দেবগন, টাবু এবং জিমি শেরগিল অভিনীত ‘অরোঁ মে কাহান দম থা’ চলচ্চিত্রের জন্য ‘কিসি রোজে’র সাথে ফিরে প্লে-ব্যাক গানের দুনিয়ায় ফেরেন মৈথিলি। গানটি সুর করেছিলেন ভারতের লেজেন্ডারি মিউজিসিয়ান এম এম কীরাভানি। বছর খানেক আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর থেকে ক্রিয়েটার্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছিলেন মৈথিলি। তার শিব তাণ্ডব স্তোত্রম শুনে মুগ্ধ হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।