বিদেশে পড়তে যেতে লম্বা সময় ধরে চেষ্টা করেছেন, পেয়েছেন স্কলারশিপও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যেতে পারেননি ভিসা পাননি বলে। এমন ঘটনা ঘটেছে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গেই। তেমনই একজন তানজুমান আলম ঝুমা।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে হাঙ্গেরি আর যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। পেয়েছেন স্কলারশিপও। কিন্তু শুধু ভিসা জটিলতার কারণে যেতে পারেননি দুই দেশের কোনোটিতেই।
তিনি বলেন, অক্টোবরে বুদাপেস্টে অ্যাপ্লাই করি। জানুয়ারিতে ওটা আমার জন্য ‘নো’ হয়ে আসে। পরে জানুয়ারিতে ইউএসের জন্য অ্যাপ্লাই করি। মোটামুটি গত বছর অক্টোবর থেকে এই নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক বছরের বেশি সময় আমার এর পেছনে চলে গেছে।
শুধু শিক্ষার্থী ভিসাই না, বহুদেশ ঘোরা ব্যক্তি কিংবা কাজের জন্যে শ্রমিক ভিসাও সহজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।
এমনকি ভিয়েতনাম কিংবা ইন্দোনেশিয়ার মতো যে দেশগুলো থেকে সহজেই ভিসা পাওয়া যেত এতদিন, তারাও অনেক ক্ষেত্রে ভিসা দিচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন খাত-সংশ্লিষ্টরা।
অথচ ভারতের পর্যটন ভিসা ছাড়া কার্যত কোনো দেশ থেকেই বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভিসার অপব্যবহার করে একদেশ থেকে অন্যদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে কমেছে বিশ্বাসযোগ্যতা।
এছাড়াও দেশের বাইরে রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রকাশ্য বিবাদে জড়ানোর কারণেও নষ্ট হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি।
এক্ষেত্রে পাসপোর্টের র্যাংকিংয়ে নিচে নেমে যাওয়াও একটি ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে বলেও মনে করছেন অনেকে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সবার আগে দেশের ভেতরে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন বিশ্লেষকরা। একইসঙ্গে কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানেরও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
কোন দেশগুলো ভিসা দিচ্ছে না?
কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা না থাকার পরও বাংলাদেশিদের ভিসা দিচ্ছে না বেশ কয়েকটি দেশ।
বিদেশে পড়তে, কাজ করতে কিংবা বেড়াতে যেতে আগ্রহীদের অনেকেই জানিয়েছেন এমন অভিযোগ। একই সমস্যার কথা জানিয়ে পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, দেশগুলো ভ্রমণসহ অনেক ধরনের ভিসা দিচ্ছে না।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ – টোয়াব-এর সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ইন্ডিয়া, ইউএই, কাতার, বাহরাইন, ওমান, উজবেকিস্তান, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম- এই সব দেশ আমাদের ভিসা দিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, থাইল্যান্ডের ভিসা অনেক বেশি সময় নেয়। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার ভিসার রেশিও কম। ফিলিপাইন অনেক বেশি সময় নেয়। ইন্দোনেশিয়ার ভিসা ফি অনেক। এমনকি অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া শ্রীলঙ্কার ইলেক্ট্রনিক ভিসা হতেও সময় নিচ্ছে দুই-তিন দিন।