December 1, 2025, 9:18 am
Title :
ফের অভ্যুত্থানে জেন-জি, উত্তাল এশিয়ার আরেক দেশ ‘সমুদ্রে অবৈধ ও অতিরিক্ত মৎস্য আহরণে মাছের সংস্থান কমে যাচ্ছে’ দেশের ৩৩ শতাংশ মানুষ রোগাক্রান্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একমাত্র সমাধান: পোপ লিও সশস্ত্র বাহিনীর বঞ্চিত সদস্যদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা বেলুচিস্তানে এফসি সদর দপ্তরে হামলা, পাল্টা হামলায় ৩ সন্ত্রাসী নিহত হঠাৎ পাল্টে গেলো বাংলালিংকের লোগো, সামাজিকমাধ্যমে চলছে আলোচনা কক্সবাজারে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা এবং কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার সঙ্গে এবার রেহানা-টিউলিপের রায় সোমবার খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য হাসিনা সরকার দায়ী: রাশেদ খান

আবু সাঈদের মৃত্যু কীভাবে, জানালেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী

Reporter Name
  • Update Time : Monday, November 17, 2025
  • 29 Time View

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে মারা গেছেন বলে দাবি করেছেন পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ব্যারিস্টার ইশরাত জাহান।

রোববার (১৬ নভেম্বর) মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া পুলিশের ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিককে জেরার সময় এ দাবি করেন তিনি। এদিন বিকাল ৩টার পর থেকে ৫টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে ট্রাইব্যুনালে।

১৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে এই পুলিশ কর্মকর্তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যদের বিচারিক প্যানেল। অপর সদস্য হলেন জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

জেরার সময় নূরে আলমের উদ্দেশে আইনজীবী ইশরাত বলেন, ওই যুবক (আবু সাঈদ) যখন গুলিবিদ্ধ হন, তখন আপনি বা আপনারা কোথায় ছিলেন?

জবাবে নূরে আলম বলেন, আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের ভেতরে ছিলাম। এসি আরিফুজ্জামান স্যারও ছিলেন। তবে গেট খোলা ছিল।

পাল্টা প্রশ্নে আইনজীবী বলেন, আপনি বলেছিলেন গুলি বা হামলা করার সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম। জবাবে ‘হ্যাঁ’ বলেন সাক্ষী ওসি।

আইনজীবী বলেন, তাদের নির্দেশে আবু সাঈদকে গুলি করা হয়েছিল বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। এ নির্দেশটি কি আপনি শুনেছেন? তখনো ‘হ্যাঁ’-সূচক জবাব দেন নূরে আলম।

আদালতকে ইশরাত বলেন, দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা যুবক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পেছনে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ছিল না। আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইটপাটকেল তার মাথার পেছনে লেগেছিল। এ জন্য রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন।

এ সময় এসব সত্য নয় বলে জানান ওসি নূরে আলম সিদ্দিক। এরপর তাকে জেরা করেন আরেক আইনজীবী।

২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে রংপুরের হারাগাছ থানায় কর্মরত ছিলেন নূরে আলম। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের দিন তথা ১৬ জুলাই সকালে সঙ্গীয় বাহিনী নিয়ে রংপুর পার্কের মোড়ে আসেন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল তাকে।

জবানবন্দিতে সেদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা ট্রাইব্যুনালের সামনে আনেন নিরস্ত্র এই পুলিশ কর্মকর্তা। এসি আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার তৎকালীন ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে আমির হোসেন ও সুজনরা গুলি চালিয়েছেন বলেও জানান। আর তাদের গুলিতে আহত হন আবু সাঈদ। গুলিবিদ্ধ হওয়ার মুহূর্তে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন আরিফুজ্জামান স্যার। পরে ছাত্র-জনতা অন্যদিকে চলে যান বলেও উল্লেখ করেন নূরে আলম।

জবানবন্দির প্রায় শেষের দিকে কিছুটা সংশোধনী দিতে চান এই পুলিশ কর্মকর্তা। অর্থাৎ বেরোবির গেটের ভেতরে থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কথা উল্লেখ করেন। তখন পুলিশের ঊর্ধ্বতন আরও কেউ ছিলেন কিনা, জানতে চায় প্রসিকিউশন।

এ সময় আপত্তি জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। তিনি ট্রাইব্যুনালের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার এখানে আপত্তি যাবে মাননীয় ট্রাইব্যুনাল। এখানে এই সংশোধন সাক্ষীর নয়, প্রসিকিউশনের। আর কেউ আসছেন কিনা, গেছেন কিনা; এমন কথা তারা বলতে পারেন না।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সুলতান মাহমুদসহ অন্যরা।

এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। আর কয়েকজনের জবানবন্দি নিয়েই সাক্ষ্য কার্যক্রম সমাপ্ত করবে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।

এ মামলার গ্রেপ্তার ছয় আসামি হলেন―এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। তাদের উপস্থিতিতেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন সাক্ষীরা।

গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © ajkerdorpon.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com