জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, দেশের উপর ঘন ঘন ভূমিকম্প নিছক ভৌগোলিক নড়াচড়া নয়, এটি আমাদের জন্য গভীর সতর্কবার্তা। ভবিষ্যতে বড় কোনো বিপদের সম্ভাবনা থাকায় শুধুমাত্র দোয়া নয়, বাস্তব প্রস্তুতি গ্রহণও অপরিহার্য।
শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, আমরা এমন একটি জনঘনত্বপূর্ণ ও অপরিকল্পিত নগরায়ণ অঞ্চলে বাস করি, যেখানে প্রতিটি অট্টালিকা সম্ভাব্য বিপদের সংকেত বহন করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঢাকায় ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে এক লাখের বেশি ভবন ধসে যেতে পারে।
রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতির ঘাটতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আধুনিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা নগণ্য, বড় ধরনের উদ্ধারযুদ্ধ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, আর অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর সক্ষমতাও সীমিত। এর মধ্যে অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ ব্যয় ও দুর্নীতি আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে।
তিনি ব্যক্তিগত ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাও স্মরণ করান। বাড়ি নির্মাণে সরকারি বিধিমালা না মানা, প্রকৌশলীর পরামর্শ উপেক্ষা করা আমাদের প্রিয়জনদের জন্য একপ্রকার ‘সামাজিক আত্মহত্যা’ হতে পারে। বিপর্যয় রোধের জন্য এখনই দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
শায়খ আহমাদুল্লাহ রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত। উদ্ধারকাজ, চিকিৎসা, জরুরি আশ্রয়, খাদ্য ও পানীয়, ট্রাফিক ও যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ—সবই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া খোলা জায়গা সংরক্ষণ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার এবং নির্মাণসামগ্রীর মান নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি।
প্রস্তুতির পাশাপাশি তিনি আধ্যাত্মিক প্রস্তুতির গুরুত্বও তুলে ধরেন। আল্লাহর রহমত ছাড়া কোনো প্রযুক্তি বা পরিকল্পনা নিরাপত্তা দিতে পারবে না। প্রতিটি দুর্যোগই আমাদের নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় থেকে সতর্কবার্তা দিচ্ছে।